নাসুম আহমেদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ৮ রানে জয় পেল টাইগাররা
এশিয়া কাপের নবম ম্যাচে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের মধ্যে এক দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে। জবাবে, আফগানিস্তান সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান করে, এবং শেষ পর্যন্ত ৮ রানে জয়লাভ করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস: তানজিদের অর্ধশতকে লড়াই করার মতো স্কোর
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। দলের শুরুটা ভালো না হলেও, ওপেনার তানজিদ হাসান একটি চমৎকার ইনিংস খেলেন, যিনি ৩১ বলে ৫২ রান করেন। তার ইনিংসের ওপর ভর করে বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৪ রানের একটি লড়াকু স্কোর দাঁড় করায়।
বাংলাদেশের ব্যাটিং স্কোরকার্ড
:
| ব্যাটসম্যান | রান | বল | ৪s | ৬s | স্ট্রাইক রেট | আউটের ধরণ |
| সাইফ হাসান | ৩০ | ২৮ | ২ | ১ | ১০৭.১৪ | b রশিদ খান |
| তানজিদ হাসান | ৫২ | ৩১ | ৪ | ৩ | ১৬৭.৭৪ | c ইব্রাহিম জাদরান b নূর আহমদ |
| লিটন দাস (c & wk) | ৯ | ১১ | ০ | ০ | ৮১.৮২ | lbw b নূর আহমদ |
| তৌহিদ হৃদয় | ২৬ | ২০ | ১ | ১ | ১৩০.০০ | c করিম জানাত b আজমাতুল্লাহ |
| শামীম হোসেন | ১১ | ১১ | ২ | ০ | ১০০.০০ | lbw b রশিদ খান |
| জাকের আলী | ১২* | ১৩ | ১ | ০ | ৯২.৩১ | অপরাজিত |
| নুরুল হাসান | ১২* | ৬ | ২ | ০ | ২০০.০০ | অপরাজিত |
- অতিরিক্ত রান (Extras run): ১৩ ( ওয়াইড ২)
- মোট🙁১৫৪ রান,৫ উইকেট,২০ ওভার)
আফগানিস্তানের বোলিং: স্পিনারদের দাপট
আফগানিস্তানের হয়ে বোলিংয়ে তাদের স্পিনাররা দারুণ পারফর্ম করেন। অধিনায়ক রশিদ খান এবং নূর আহমদ উভয়েই ২টি করে উইকেট নেন।
আফগানিস্তানের বোলিং স্কোরকার্ড
| বোলার | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | ইকোনমি |
| ফজলহক ফারুকি | ৪ | ০ | ৩৭ | ০ | ৯.২৫ |
| আজমতুল্লাহ | ৩ | ০ | ১৯ | ১ | ৬.৩৩ |
| এ এম গজনফর | ৩ | ০ | ৩২ | ০ | ১০.৬৭ |
| রশিদ খান (c) | ৪ | ০ | ২৬ | ২ | ৬.৫০ |
| নবী | ২ | ০ | ১৭ | ০ | ৮.৫০ |
| নূর আহমদ | ৪ | ০ | ২৩ | ২ | ৫.৭৫ |
আফগানিস্তানের ব্যাটিং পারফরম্যান্স: বাংলাদেশের বোলারদের দাপট
১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। দলের ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন। তবে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে আফগান ব্যাটসম্যানরা বড় পার্টনারশিপ গড়তে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে যায়।
আফগানিস্তানের ব্যাটিং স্কোরকার্ড
:
| ব্যাটসম্যান | রান | বল | ৪s | ৬s | স্ট্রাইক রেট | আউটের ধরণ |
| সেদিউল্লাহ আতাল | ০ | ১ | ০ | ০ | ০.০০ | lbw b নাসুম আহমেদ |
| রহমানুল্লাহ গুরবাজ (wk) | ৩৫ | ৩১ | ২ | ২ | ১১২.৯০ | c জাকের আলী b রিশাদ হোসেন |
| ইব্রাহিম জাদরান | ৫ | ১২ | ১ | ০ | ৪১.৬৭ | lbw b নাসুম আহমেদ |
| গুলবাদিন নাইব | ১৬ | ১৪ | ২ | ০ | ১১৪.২৯ | c রিশাদ হোসেন b রিশাদ হোসেন |
| মোহাম্মদ নবী | ১৫ | ১৫ | ০ | ১ | ১০০.০০ | b মুস্তাফিজুর |
| আজমতুল্লাহ ওমরজাই | ৩০ | ১৬ | ১ | ৩ | ১৮৭.৫০ | c সাইফ হাসান b তাসকিন আহমেদ |
| করিম জানাত | ৬ | ৮ | ০ | ০ | ৭৫.০০ | রান আউট (নুরুল হাসান/লিটন দাস) |
| রশিদ খান (c) | ২০ | ১১ | ২ | ১ | ১৮১.৮২ | c তাসকিন আহমেদ b মুস্তাফিজুর |
| নূর আহমদ | ১৪ | ৯ | ০ | ২ | ১৫৫.৫৬ | c নুরুল হাসান b তাসকিন আহমেদ |
| এ এম গজনফর | ০ | ১ | ০ | ০ | ০.০০ | c লিটন দাস b মুস্তাফিজুর |
| ফজলহক ফারুকি | ২* | ৩ | ০ | ০ | ৬৬.৬৭ | অপরাজিত |
- অতিরিক্ত রান (Extras run): ৩ ( ওয়াইড ২ ,নো বল ১)
- মোট🙁১৪৬ রান,১০ উইকেট,২০ ওভার)
বাংলাদেশের বোলিং স্কোরকার্ড
| বোলার | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | ইকোনমি |
| নাসুম আহমেদ | ৪ | ১ | ১১ | ২ | ২.৭৫ |
| তাসকিন আহমেদ | ৪ | ০ | ৩৪ | ২ | ৮.৫০ |
| মুস্তাফিজুর রহমান | ৪ | ০ | ২৮ | ৩ | ৭.০০ |
| রিশাদ হোসেন | ৪ | ০ | ১৮ | ২ | ৪.৫০ |
| শামীম হোসেন | ১ | ০ | ১৬ | ০ | ১৬.০০ |
| সাইফ হাসান | ৩ | ০ | ৩৯ | ০ | ১৩.০০ |
ম্যাচের ফলাফল ও তাৎপর্য
ম্যাচটি শেষ ওভার পর্যন্ত টানটান উত্তেজনায় ভরা ছিল। জয়ের জন্য শেষ ওভারে যখন আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান, তখন বাংলাদেশের বোলাররা স্নায়ুচাপ ধরে রেখে আফগানদের মাত্র ৫ রান করতে দেয়। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানকে ৮ রানের ব্যবধানে হারিয়ে এক দুর্দান্ত জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে এশিয়া কাপে সুপার ফোরের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল টাইগাররা। অন্যদিকে, এই পরাজয়ের মাধ্যমে আফগানিস্তানের সুপার ফোরে যাওয়ার পথ কঠিন হয়ে গেল।
- বিজয়ী: বাংলাদেশ (৮ রানে জয়ী)
- ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাসুম আহমেদ
- ভেন্যু: শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম
এই ম্যাচের সেরা ৫টি মুহূর্ত
১. তানজিদ হাসানের দুর্দান্ত অর্ধশতক: কঠিন পরিস্থিতিতে তানজিদ হাসান ৩১ বলে ৫২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন, যা বাংলাদেশের জয়ের ভিত তৈরি করে।
২. নাসুম আহমেদের ম্যাচ-সেরা পারফরম্যান্স: নাসুম আহমেদ ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে আফগান ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপ বজায় রাখেন এবং ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন।
৩. মুস্তাফিজুর রহমানের ডেথ ওভার স্পেল: মুস্তাফিজুর তার শেষ স্পেলে ৩ উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন, যা জয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
৪. আফগানিস্তানের শেষ দিকের ধস: এক পর্যায়ে জয়ের পথে থাকা আফগানিস্তান শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেলে, যা বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে।
৫. বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর জয়: শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচটি হাড্ডাহাড্ডি ছিল, যেখানে বাংলাদেশ স্নায়ুচাপ ধরে রেখে ৮ রানে জয়লাভ করে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
ম্যাচে কে জিতেছে এবং কত রানে?
এই রোমাঞ্চকর ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান কে বানিয়েছে?
বাংলাদেশের তানজিদ হাসান ৫২ রান করে এই ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন।
এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি উইকেট কে নিয়েছে?
বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান ৩টি উইকেট নিয়েছেন, যা এই ম্যাচে সর্বোচ্চ।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ কে ছিলেন?
নাসুম আহমেদ তার দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ২টি উইকেট নিয়ে আফগানদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
ম্যাচটি কোন স্টেডিয়ামে খেলা হয়েছিল?
এই ম্যাচটি শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
Your comment will appear immediately after submission.